সোনারগাঁও দর্পণ :
এক সময়ের স্রোতন্বেসী মেঘনা তার আগের রূপ হারায়নি। এখনো মেঘনার প্রবল স্রোতে ভেসে যায় জীবন। নৌ-পরিবহন ডুবে গেলে কোন কোন সময় কোন কোনটার হদিস না পাওয়ার নজির আছে অনেক। কিন্তুসকল জান ও মালের উর্ধ্বে মানুষের জীবন। আর সেই অমূল্য সেই জীবন রক্ষায় নিজ উদ্যোগে সতর্কতামুলক উদ্যোগ নিয়েছে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার তেতৈতলা এলাকার কতিপয় যুবক। তারা ব্যানার টাঙিয়ে মেঘনা ব্রীজের পিলারে সেই ব্যানার লাগিয়ে দেন স্বউদ্যোগে।
জানাগেছে, প্রতি বছর অতি উৎসাহী কিছু মানুষের অসতর্কাতার কারণে গজারিয়া অংশে মেঘনা ব্রীজের অদূরে পানিতে ডুবে কোন না কোন মানুষের মৃত্যু হয়। যা অত্যন্ত মর্মান্তিক। সবশেষ গত ২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় এলাকার আতিক হোসেনের ছেলে ও নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ ফারুফ (২০) নিখোঁজ হয়। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে গজারিয়া থানার মেঘনা নদীর ভাটিবলাকী এলাকায় ফারুকের লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে নৌ পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনার পর স্থানীয় যুবক ইমরান ভুইয়ার উদ্যোগে এবং স্থানীয় ইফাত আলম রিমন, রাফিজ ভুইয়া, আসিফ দেওয়ান, রোহান, নিরবের স্বেচ্ছাশ্রমে মেঘনা নদীর উপর নির্মিথ মেঘনা ব্রীজের পিলারে সতর্কতামুলক ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে লেখা রয়েছে, “বিপদজনক এরিয়া” মেঘনা নদীতে আজ (৪ এপ্রিল) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নদীতে নামা নিষেধ করা হইল। “জীবন অমূল্য, ঝুঁকি নয়-পানিতে না” ‘পানিতে নামা জীবননাশের কারণ হতে পারে।’
তেতৈতলা এলাকার পাথর ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ২ এপ্রিল ২২ জন যুবক গোসল করতে মেঘনা নদীতে নামে। সকলে উঠলেও ফারুক না উঠায় তাকেও উঠতে বলে সহপাঠিরা। ফারুক তাদের জানায় একটি মাত্র ডুব দিয়েই সে উঠে যাবে। কিন্তু ডুব দেওয়ার পর সে না ওঠায় অন্যরা তাকে খুঁজে পায়নি। হয়তো ওই ডুবই ছিল ছেলেটির শেষ ডুব।
পরে আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, প্রতিবছরই এইস্থানে কেউ না কেউ নিখোঁজ হয় এবং পরবর্তীতে মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, যেহেতু মেঘনায় প্রচুর স্রোত। আর ছেলেটি সাতার জানতনা। তাই স্রোতের তীব্রতায় ডুবে ভেঁসে গিয়ে মৃত্যু হয়। তাই যুব সমাজের এমন উদ্যোগকে স্বাগত ও সাধুবাদ জানান তিনি।
Post a Comment