সোনারগাঁও দর্পণ :
কোন রকম খাবারতো নয়ই বরং ঈদের দিনও এক ফোঁটা পানি চেয়েও পায়নি। টানা তিন দিন খুটির সাথে বেধে নির্যাতন করে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল পাষন্ড স্বামী উজ্জল। তিনি দিন গলায় ফাঁস দিয়েও মারতে চেয়ে ব্যর্থ হয়।
তিন দিন পর গতকাল মৃত্যু যন্ত্রণার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা গিয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় সাদিয়াকে উদ্ধার করে। পরে তার পালিত মা তাকে হাসপাতাল ভর্তি করে। বর্তমানে সাদিয়া স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
যৌতুক না পাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার দমদমা নদভী নগর এলাকার মৃত মাহজাহানের ছেলে উজ্জল এ কান্ড ঘটায়।
এ বিষয়ে থানায় লিখত অভিযোগে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী জুলেখা জানান, ২০ বছর আগে মেঘনা ব্রীজ এলাকা থেকে কুড়িয়ে পান সাদিয়াকে। বিশ বছর নিজের সন্তানের আদর-স্নেহ দিয়ে লালন-পালন করে গত ২ বছর আগে দমদমা গ্রামের মৃত শাহ জাহানের ছেলে উজ্জলের সাথে বিয়ে দেন সাদিয়াকে।
বিয়ের পর থেকেই উজ্জল কারণে-অকারণে তার পালিত মেয়ের কাছে যৌতুক বাবদ ৩ লক্ষ টাকা দাবী করে আসছিল। উজ্জলকে বিভিন্ন সময় দুই লাখ টাকাও দেওয়া হয়েছে। তাতেও সে ক্ষান্ত হয়নি। বরং সাদিয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছিল। বর্তমানে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে সাদিয়া চিকিৎসাধীন।
নির্যাতনের শিকার সাদিয়া জানায়, ঈদের তিন দিন আগ থেকে তাকে একফোটা পানিও দেয়নি স্বামী উজ্জল। শুধু মারতো আর হাসতো। তার মা-বোন সবাই জানতো। কিন্তু কিছুই বলতো না।
এরআগেও তিন বার গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। একবার দমবন্ধ হয়ে দাতে জিহ্বা আটকেও যায়। আল্লাহর কৃপায় বেঁচে যান। এমনকি তার চুলও কেটে দিয়েছে স্বামী উজ্জল।
সবশেষ গত ২ এপ্রিল উজ্জলের মা মনোয়ারার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে পুনরায় নির্যাতন শুরু করলে তার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যান এবং খুটির সাথে বাধাবস্তায় তাকে উদ্ধার করে।
এঘটনায় উজ্জলের শাস্তি দাবি করেছেন নির্যাতনের শিকার সাদিয়া, তার মা জুলেখা এবং এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান জানান, এ ঘটনায় মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। মেয়েটি যেহেতু এতিম। সোনারগাঁও থানা পুলিশ সর্বোচ্চ মানবিকতার সাথেই মামলাটি দেখবে।
Post a Comment