Halloween Costume ideas 2015
March 2025


মাহবুবুল ইসলাম সুমন 

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে নৌ পুলিশকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা দিয়ে মেঘনা নদীতে চলছে ব্যাপক চাঁদাবাজি। নদীতে চলাচলরত বিভিন্ন নৌযান থেকে প্রকাশ্যে ও মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে নেয়া হয় চাঁদা। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে সেই নৌযান শ্রমিকদের বেধরক মারধর করা হয়। অস্ত্র দেখিয়ে দেয়া হয় হত্যার হুমকি।

নদীতে চাঁদাবাজি ও ডাকাতি রোধে নৌ-পুলিশের টহল থাকলেও চাঁদাবাজদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা থাকায় কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা দেয়ার নামে পুলিশের বিরুদ্ধেও রয়েছে চাঁদাবাজির অভিযোগ। 

বর্তমানে সোনারগাঁওয়ের মেঘনা নদীর ত্রাস হিসেবে পরিচিত ডাকাতি, মারামারিসহ একাধিক মামলার আসামী এই চাঁদাবাজের নাম রনি হাসান। মেঘনা নদীর আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা এলাকা থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া পর্যন্ত চলে রনি হাসানের চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজির টাকা নৌ ফাঁড়ি ইনচার্জ থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পর্যন্ত ভাগ পায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

চাঁদাবাজ রনি হাসান এবং পুলিশের চাঁদা নেয়ার বিষয়টি নৌ শ্রমিকদের অভিযোগের প্রায় ১৭ টি ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভাধীন সাহাপুর গ্রামের নুরা মিস্ত্রির ছেলে রনি হাসান এক সময় পিরোজপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেনের শ্রমিক হিসেবে দৈনিক ৩শ’ টাকার বিনিময়ে মেঘনা নদীতে বিভিন্ন নৌযানে চাঁদা আদায়ে কাজ করতো। পরবর্তীতে সে জাকির হোসেনকে পল্টি দিয়ে নিজেই সিন্ডিকেট করে নদীতে চাঁদাবাজি ও ডাকাতি শুরু করে মেঘনা নদীর ভয়ঙ্কর ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, নরসিংদী ও ভৈরব থেকে সোনারগাঁ হয়ে ঢাকা, চাঁদপুর নৌ রুটে চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে রনি।

মেঘনা নদীর এই নৌ রুটে শত শত বাল্কহেড, বার্জ, কার্গো, ইঞ্জিন চালিত বালুবাহী নৌকা, চুনা পাথর, ও কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হয়। সেসব নৌযানকে টার্গেট করে রনি হাসান ও তার সিন্ডেকেট চাঁদাবাজি করে থাকে। প্রতিদিন এসব নৌযান থেকে ২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকে রনি। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাদের করা হয় বেধরক মারধর। এমনকি অস্ত্র দেখিয়ে দেয়া হয় হত্যার হুমকিও। তাই প্রাণভয়ে ও নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য রনিকে প্রতিদিন চাঁদা দিয়ে পণ্য পরিবহন করেন নৌযান শ্রমিকরা। তবে কিছু নৌযান থেকে নগদ ও অধিকাংশ নৌযান থেকে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা নেয় রনি হাসান।

চাঁদাবাজি ও ডাকাতি রোধে মেঘনা নদীতে বৈদ্যেরবাজার নৌ ফাঁড়ি পুলিশ নদীতে টহলরত থাকলেও চাঁদাবাজদের সাথে সখ্যতা থাকায় এবং মোটা অঙ্কের মাসোহারা পাওয়ায় তারা প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। 

তাছাড়া নিরাপত্তা দেয়ার আড়ালে পুলিশও করছে চাঁদাবাজি। তারা ২ শ’ টাকা করে প্রতিটি পণ্যবাহী নৌযান থেকে চাঁদা নেন। যদি কোনো নৌযান থেকে পুলিশের কাছে চাঁদাবাজ রনি হাসানের নাম বলা হয়, তাহলে পুলিশ ২শ টাকার পরিবর্তে ১শ’ টাকা নেয়। আবার অনেক নৌযান এমনিতেই ছেড়ে দেয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে রনি সন্ত্রাসী দিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে টাকা পয়সা লুটে নেয়। সেখানে পুলিশকেও নিরাপত্তা দিতে বাঁধা দেয়। পরবর্তীতে নৌযান মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্বিঘ্নে চলাচলের সুযোগ করে দেবে বলে তাদের সঙ্গে চুক্তিবন্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিলেই কেউ তাদের সমস্যা সৃষ্টি করে না। পুলিশ থাকেন তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে। চুক্তির টাকা থেকে পুলিশও ভাগ পেয়ে থাকেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে। 

বৈদ্যেরবাজার এলাকার নৌ ফাঁড়ি থেকে শুরু করে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পেয়ে থাকেন মাসোহারা। তাই চাঁদাবাজ রনিকে গ্রেফতারে কোন ব্যবস্থা নেয় না প্রশাসন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার সিন্ডিকেটের এক সদস্য জানিয়েছেন, রনি মেঘনা নদীর ভয়ঙ্কর ত্রাস। তার সিন্ডিকেটে মেঘনা উপজেলার আব্দুল বারেকের তিন ছেলে আলী হোসেন, আবুল হাসনাত ও মহসিন জড়িত। কিছুদিন বৈদ্যেরবাজার এলাকার কয়েকজন যুবক নদীতে তাদের সঙ্গে কাজ করলেও এখন আর করেন না বলে তার দাবি। তাদের মাধ্যমেই শ্রমিকদের মারধর করে থাকেন। 

মারধরের ভয়ে নৌ মালিক ও শ্রমিকরা তার সঙ্গে আঁতাত করে বিকাশে টাকা পৌছে দেন। নৌ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ফাঁড়ি পুলিশদের ম্যানেজ করেই এ চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে এবং রাতের বেলা ডাকাতি করে। 

এআগে, রনি ২০২২ সালে নগদ প্রায় ১৩ লাখ টাকা, ল্যাপটপ ও ১৩ টি মোবাইল সিমসহ গ্রেফতার হয়। তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় ডাকাতি, মারামারিসহ দেশের বিভিন্ন থায়ায় ১০ টি চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। 

সরেজমিনে মেঘনা নদীর নলচর এলাকায় গিয়ে নৌ যানকে থামাতে বললেই রনি ভাইয়ের বডি বলে দাবি করেন। রনির বডি বলার কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, বিকাশের মাধ্যমে প্রতিটি বডির জন্য তাকে ২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়। এই টাকা দিলেই নির্বিঘেœ হামলা ও মারধর ছাড়াই তারা চলাচল করতে পারেন।

এসময় বৈদ্যেরবাজার নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে ২টি ট্রলারকে নদীতে টহল দিতে দেখা যায়।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত রনি হাসান মোবাইলে জানান, তিনি বর্তমানে বন্দর উপজেলার তিনগাঁও এলাকায় থাকেন বলে জানান। চাঁদাবাজির বিষয়টি সত্য নয়। টাকাসহ গ্রেফতার হওয়ার কথা স্বীকার করলেও একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেন। 

বৈদ্যেরবাজার নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, নৌযান শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্যই নদীতে টহল দেওয়া হচ্ছে। তবে পুলিশের চাঁদা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। শ্রমিকরা পুলিশের বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি দিয়েছে এ,ন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এছাড়াও বিকাশে চাঁদাবাজির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিকাশের মাধ্যমে চাঁদাবাজির বিষয়টি আমার জানা নেই। পুলিশ চাঁদাবাজের পক্ষে অবস্থান নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়। তাছাড়া নৌ ফাঁড়ি পুলিশের বিষয়ে চাঁদা আদায়ের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


 


সোনারগাঁও দর্পণ :

সোনারগাঁওয়ে সম্প্রতি এক প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান হাবু (৪২) কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-১১’র সদস্যরা। সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে ঝিনাইদহ সদর থানার গোয়ালপাড়া নামক স্থান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 


গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান হাবু সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের রাউৎগাঁও গ্রামের আতশ আলীর ছেলে। 


১১ মার্চ র‌্যাব-১১ এর স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইশতিয়াক হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্যাতিতা একজন প্রতিবন্ধী হলেও কথা বলতে পারে এবং নিজে এলাকায় চলাফেরা করায় অভ্যস্ত। গত ২২ ফেব্রæয়ারী দুপুর ১টার দিকে পেচাইন গ্রাম থেকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় হাবিবুর রহমান হাবু ওই তরুণীকে কৌশলে তার বসত ঘরে নিয়ে যায় এবং জোর করে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে এই ঘটনা কাউকে জানালে ওই তরুণীকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে দেড়ে দেয়। 


এদিকে, প্রতিবন্ধী ওই তরুণী ঘটনাটি বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে জানালে তরুণীর মা বাদী হয়ে হাবিবুরকে আসামী করে থানায় একটি মামলা করে।


র‌্যাব সে মামলার সূত্র ধরে সোমবার আসামীকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার সকালে থানায় সোপর্দ করে। থানা পুলিশ পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠায়।



সোনারগাঁও দর্পণ :

সোনারগাঁওয়ে জাহিদ ও মেহেদী নামে দুই ছিনতাইকারীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। শুক্রবার (৭ মার্চ) দিবাগত রাত ১০ টা ৩০ মিনিটের দিকে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামে জাকির হোসেন জিকু এবং তার বড় ভাই দমদমা গ্রাম প্রধান সৈয়দ হোসেনের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, দমদমা গ্রামের জাকির হোসেন জিকুর বড় ছেলে ও সোনারগাঁও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) দাবিদার জাহিদ এবং তার ছোট ছেলে মেহেদী হাসান মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা-কালাদরগা রোডের দমদমা ব্রীজ, দলদার, বড় সাদীপুর- মোগরাপাড়া বাজার রোডের বিশেষখানা, ষোলপাড়া আমতলা, লেবুছড়া, সাহচিল্লাহপুর, কাবিলগঞ্জ, সোনারগাঁও সরকারি কলেজ, মোগরাপাড়া বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে দিন ও রাতের বিভিন্ন সময় জাহিদ ও মেহেদীর ছিনতাই বাহিনীর সদস্যদের সহয়তায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে দীর্ঘ দিন ধরে ছিনতাই করে সর্বস্ব লুট করে আসছিল। 

এমনকি এ সমস্ত এলাকায় ভাড়াটিয়া দিন-মজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষদের মোবাইল, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কারসহ সাথে থাকা সকল মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় জাহিদ-মেহেদী  গ্রুপ। প্রতিদিন বিভিন্ন স্পটে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায় তারা। 

ছিনতাইয়ের কবলে পড়া ব্যক্তিরা বেশিরভাগ ভাড়াটিয়া হওয়ায় থানা পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ করার সাহস পায়না। দীর্ঘ দিন প্রতিনিয়ত এ ধরণের ঘটনায় এ সকল এলাকার ভাড়াটিয়ারা অন্যত্র চলে যাওয়ায় স্থানীয় বাড়ির মালিকরাও পড়েছেন বিপাকে। 

এমনকি এ সকল এলাকার ভাড়াটিয়ারা তাদের আত্মীয়-স্বজনকে তাদের বাড়িতে আসলে সাবধানে আসার পরামর্শও দিতেন বলে স্থানীয়রা জানায়। এক কথায় জাহিদ ও মেহেদী  গ্রুপের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে স্থানীয়রা।

এদিকে, থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে এ সকল বিষয় জানালেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় আরও ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে ভুক্তভোগী গ্রামের বাসিন্দারা।

এরই ধারাবহিকতায় শুক্রবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে ষোলপাড়া আমতলা এলাকার আরশাদ স্বর্ণকারের বাড়ির ভাড়াটিয়া বরিশাইল্লা শাহিনের এক আত্মীয় বেড়াতে আসে। শাহিনের বাড়িতে তার আত্মীয় যাওয়ার সময় তার কাছ থেকে আমতলা নামক স্থানে ৫ হাজার টাকা ও মোবাইল রেখে তাকে মারধর করে বিদায় দেয় জাহিদ, মেহেদী ও তার বাহিনীর ৫/৭ জন সদস্য। ভুক্তভোগী ওই আত্মীয় এ তথ্য শাহিনকে জানালে শাহিন,  জাহিদ ও মেহেদীর বাড়িতে গিয়ে তাদের বাবা জাকির হোসেন জিকুকে জানায়। জাকির হোসেন জিকু ছেলেদের শাসন না করে বিচার নিয়ে বাড়ি যাওয়ায় উল্টো শাহিনকে চরথাপ্পর মেরে বিদায় করে দেয়। শাহিন এ কথা তার ষোলপাড়া এলাকায় গিয়ে জানালে ষোলপাড়া মসজিদে তারাবিহ নামাজ শেষে মুসল্লীরা ক্ষোভে ফেটে পরেন এবং মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পরেছে ঘোষণা দেয়। মাইকের ঘোষণা শুনে দমদমা, কালাদরগাহ (গিয়াস উদ্দিন আযম শাহ), দলদার, বড় সাদীপুর, ষোলপাড়া আমতলা, বিশেষখানা, লেবুছড়া গ্রামের কমপক্ষে দেড় সহস্রাধিক গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাহিদ ও মেহেদিকে ধরতে তার বাড়িতে যায়। এ সময় তার বাড়ি থেকে তার এক আত্মীয় রাম দা নিয়ে এলাকাবাসীকে মারতে উদ্যত হলে বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী জাকিরের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় রাম দা নিয়ে তেড়ে আসা ওই আত্মীয় দৌড়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে নিরাপদে যায়। 

এদিকে, জাকিরের বাড়িতে হামলার পাশাপাশি জাকিরের বড় ভাই দমদমা গ্রাম প্রধান সৈয়দ হোসেন তার ভাতিজার দিনের পর দিন বিভিন্ন অপকর্মের কথা জেনেও বিচার না করায় এবং জাহিদ ও মেহেদীর ছিনতাইয়ের কাজে সৈয়দ হোসেনের দুই ছেলে মাহফুজ ও মাহিন সহযোগিতা করে এমন অভিযোগে সৈয়দ হোসেনের বাড়িতেও হামলা-ভাঙচুর চালায়।

এ সময় উত্তেজিত জনতা জাকিরের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে দমদমা গ্রামের উপস্থিত মুরুব্বিরা বাড়ি-ঘরে নারি ও শিশু রয়েছে জানিয়ে আগুন দেওয়া থেকে ক্ষুব্দ ভুক্তভোগীদের বিরত রাখতে সক্ষম হোন। 

এরআগে মসজিদের মাইকে গ্রামে ডাকাত হামলার খবর শুনে ওই এলাকায় টহলরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি গাড়ি দমদমা গ্রামে প্রবেশ করে জাহিদ ও মেহেদীকে খুঁজেছে বলে স্থানীয়রা জানায়। 

এদিকে, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সাহেব বাড়ি ও গোহাট্টা গ্রামের মসজিদের মাইকে ডাকাত পরেছে বলে ঘোষণা দিতে শোনা যায়। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

আলহামদুলিল্লাহ্। বছর ঘুরে আবারও আমাদের মাঝে উপস্থিত পবিত্র মাস মাহে রমজান। 

বাংলা, ফরাসি, উর্দু ‘সাওম’ শব্দের অর্থ ‘রোজা’। সাওম এর অর্থ বিরত থাকা। সাওম এর বহুবচন হলো ‘সিয়াম’। 

আল্লাগ সোবহান তায়ালা পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারাহ এর ১৮৩ ও ১৮৫ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।’ হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো; যেমন দেওয়া বিধান দেওয়া হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। 

এছাড়া, একই সুরার ১৮৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সোবহান তায়ালা বলেন, “ আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ রাত্রির কালোরেখা হতে উষার শ্রভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। 

মাহে রমজানকে আল্লাহ তিন ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম দশ দিন রহমত, পরের দশ দিন মাগফিরাত এবং শেষ দশ দিন নাজাত।

শেষ দশ দিন অর্থাৎ নাজাতের দশ দিনের মধ্যে আল্লাহ সোবহান তায়ালা একটি দিনকে হাজার বছরের চেয়ে উত্তম গুণ দান করেছেন। আর সেটি হলো ‘লাইলাতুল কদর’। 

পবিত্র হাদিসে এসেছে, লাইলাতুল কদরকে নাজাতের দশ দিনের মধ্যে বেজোড় রাতে খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছেন। 

হাদিসে এসেছে, একদিন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পবিত্র জুম্মার দিন খোৎবা দিতে মিম্বারে উঠছিলেন। মিম্বারে প্রথম সিড়িতে পা দিয়ে বলেছেন আমিন। দ্বিতীয় সিড়িতে পা দিয়ে বলেছেন আমিন, একইভাবে তৃতীয় সিড়িতে পা দিয়ে বলেছেন আমিন। 

হুজুরপাকের এমন আচরণে উপস্থিত সাহাবিরা কিছুটা বিচলিত হলেন এবং নামাজ শেষে নবিজীর কাছে ভয়ে ভয়ে সম্মানের সাথে এর কারণ জানতে চাইলেন।

নবিজী বললেন, ‘আমি যখন প্রথম মিম্বারে পা রাখতে যাই তখন হযরত জিবরীল (আঃ) ওহি আনলেন। জানালেন, মা-বাবাকে জীবিত পেয়েও যে তাদের খেদমত করে মন জয় করতে পারলোনা সে ধ্বংস হয়ে যাক। আমি বললাম আমিন।

দ্বিতীয় মিম্বারে পা রাখার সময় জানালেন, মাহে রমজান পেয়েও যে নিজের গুণাহ মাফ করাতে পারলো না সে ধ্বংস হয়ে যাক। আমি বললাম আমিন।

তৃতীয় সিড়িতে পা দেওয়ার সময় জানালেন, আপনার নাম শুনে যে দরুদ পাঠ করলো না, সে ধ্বংস হোক’। আমি বললাম আমিন।

এতেই বুঝা যায় যে, পবিত্র মাহে রমজানকে আল্লাহ কতো গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। 

রোজার বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে, সাবালক, স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি, রোজা পালনে সক্ষম সুস্থ্য সকল নর-নারীর জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ বা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। তবে, নারীদের মাসিককালীণ, সন্তান প্রসবকারী মা, অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য রোজা পরবর্তী সময়ে কাজা আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

অপরদিকে, অক্ষম ব্যক্তি যাদের সুস্থ্য হয়ে রোজা পালনের সামর্থ থাকবেনা বা সুস্থ্য হয়ে রোজা রাখতে পারবেন না বলে মনে হয়, তাদের জন্য ফিদিয়া দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

বলা হয়েছে, প্রতিটি রোজার জন্য একটি করে সদকাতুল ফিতরের সমান দান করতে। আর এটি তাদেরই দেওয়া যাবে যারা যাকাত নেওয়ার যোগ্য। 

অর্থাৎ আল্লাহ সোবহান তায়ালা রমজানকে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ করে বান্দাদের মধ্যে দিয়েছেন তা সহজেই অনুমেয়। 

তাই আসুন, আমরা সকলে পবিত্র মাহে রমজানের ফজিলত পেতে আল্লাহর আদেশ পালনের জন্য এর যথাযথ পবিত্রতা রক্ষা করে সত্যিকারের আত্মসুদ্ধির জন্য রোজা পালন করি।

সকলকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। খোশ আমদেদ মাহে রমজান।


MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget