সোনারগাঁও দর্পণ :
৭২ পরবর্তী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক দলগুলেই ক্ষমতায় এসেছে, পাঁচ বছর পর শুধু ক্ষমতার পালাবদলই হয়েছে কিন্তু জনআকাঙ্খা কখনোই পুরণ হয় নাই মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ৫ বছর পর যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে তারা ক্ষমতায় বসেই দখলবাজী, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করা, জনগণকে জিম্মি করা, লুটপাট করা, রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয় করণ করা, নিজেদের মতো করে আইন পরিবর্তন করা বিগত ৩৩ বছরের সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের জনগণ দেখেছে। ৫ বছর পর শুধু দল পরিবর্তন হয়েছে, সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। সাধারণ মানুষ শুধু প্রতারিতই হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভা মাঠে ‘সোনারগাঁও গণ অধিকার পরিষদ’র ব্যানারে আয়োজিত “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনআকাঙ্খা” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
নুরুল হক নুর আরও বলেন, দেশের পরিবর্তনের জন্য, গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আকাঙ্খার নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কাজে এগিয়ে যাওয়ার কথা ব্যক্ত করেন। উদাহরণ স্বরূপ বিগত বিভিন্ন সরকারের শাসনামলে এমপি মন্ত্রীদের ছত্রছায়ায় সোনারগাঁওয়ের মেঘনা নদীর দুই তীরে গড়ে উঠা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর দখলের কথা তুলে ধরেন, যেগুলোর দখলদারিত্ব এখনো চলমান বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষ নতুন নেতৃত্বকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত তাই, নতুন নেতাদের মানুষের মনের কথা বুঝতে হবে। আওয়ামী লীগের মতো দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মানিলন্ডারিং আর চাঁদাবাজির মাধ্যমে নেতৃত্বের চিন্তা করলে আওয়ামী লীগের মতোই কাপড় ছাড়া এক কাপড়ে খালি হাতে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন।
সোনারগাঁও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান মিল্কীর সভপতিত্বে ভিপি নুর আরও বলেন, সম্প্রতি দেশে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তা শুধু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে পটপরিবর্তন হয়নি। এর জন্য দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষদের বিগত দেড় দশক ধরে লড়াই সংগ্রাম করতে হয়েছে।
নতুন বাংলদেশ বিনির্মাণে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক সমঝতা প্রয়োজন, পুরোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিয়ে, পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে এদেশের শাসন ব্যবস্থা চলবেনা জানিয়ে তিনি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ১৯৭২ পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যতবারই রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই তারা একক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। জনগণকে কুক্ষিগত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত ছিল। এ সময় কারো নাম প্রকাশ না করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েও অন্যের বিয়ে করা বৌ-কে জোড় করে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন নুর।
তিনি বলেন, জুলাই-গণঅভ্যুত্থানের উদ্দেশ্যই ছিল ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্তের বিরোধ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে দেশকে নুতনভাবে সাঁজানো। তাই আগামীতে যে কোনভাবেই ফ্যাসিবাদরা যেন পুণরায় ক্ষমতায় আসতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রেখে আগামী নির্বাচনে সকলকে ভোট দেওয়ার আহবান জানান নুর।
অনুষ্ঠানে গণঅধিকার পরিষদ সোনারগাঁও শাখার সদস্য সচিব একেএম সাইদুজ্জামান ও সোনারগাঁও পৌরসভা গণঅধিকার পরিষদের নেতা উলফাত কবির মাস্টারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র ও সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, সহ সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আনিসুর রহমান মুন্না, নারায়ণগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের জেলা মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন প্রমূখ।
Post a Comment