সোনারগাঁও দর্পণ :
৫ আগস্টের ঘটনাকে ষোল বছরের স্বৈরশাসনের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত পরিচালক ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডশনে মাসব্যাপী লোক কারু শিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব-২০২৫ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার দেশের সংস্কৃতিকে উদ্যোশ্যমূলকভাবে দুটি ভাগে বিভক্ত করে দেশে রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করে রেখেছিল। যা রাজনীতি ও সংস্কৃতির জন্য অনেক ভয়ানক বিষয়। অথচ, দেশে চলমান সাংস্কৃতিক বিরোধ শেষ না হলে কখনোই রাজনৈতিক বিরোধ শেষ হবে না।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর স্বৈরশাসক প্রধান দেশ ছেড়ে বিদেশে বসে সে দেশের মিডিয়াকে ব্যবহার করে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। যা এখনো অব্যাহত আছে। সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকারও আহবান জানান ফারুকী।
সোনারগাঁও দেশের সাংস্কৃতিক নগরের যোগ্যতা রাখে জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, সোনারগাঁওয়ের পানাম নগর ও অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থাপনা নিয়ে সাংস্কৃতিক নগরী গঠন করতে পারলে শুধু দেশীয় পর্যটকরাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা সোনারগাঁওয়ে এসে তাদের পর্যটনের চাহিদা মেটাতে পারবেন বলে মত দেন তিনি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যে স্পীড নিয়ে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে, বাংলাদেশে যে গণঅভুত্থান ঘটিয়েছে দেশের সংস্কৃতি রক্ষায়ও সেই স্পীড নিয়ে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে হবে। আর সোনারগাঁওকে বিশে^র দরবারে সাংস্কৃতিক নগরী হিসেবে তুল ধরতে এখানকার মানুষদেরই বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্তে¡ অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান, যুগ্ম সচিব হেলাল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার, ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক একেএম আজাদ সরকার।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনারগাঁও পৌরসভা প্রশাসক ফারজানা রহমান, স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ও বিভিন্ন সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এরআগে, কারুশিল্পে বিশেষ অবদান রাখায় নেত্রকোণার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি গারো সম্প্রদায়ের কারুশিল্পী নিলাম চিছিং, সোনারগাঁওয়ের কাঠেঁর হাতি-ঘোড়া তৈরি করে দেশীয় সংস্কৃতির অংশ কারু শিল্পে বিশেষ অবদান রাখায় বিরেন্দ্র সূত্রধর ও টেপা পুতুল তৈরিতে কিশোরগঞ্জের সুনীল পাল প্রত্যেককে এক ভরি ওজনের সোনার পদক ও নগদ এক লাখ টাকার চেক এবং কুটির শিল্প নকশিকাঁথায় বিশেষ অবদান রাখায় সোনারগাঁওয়ের হোসনে আরা বেগম ও প্রায় বিলুপ্ত তাঁমা-কাঁসা শিল্প বিশেষ অবদান রাখায় কুমিল্লার মানিক সরকারকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শিল্পাচার্জ জয়নুল আবেদিন আজীন সন্মাননা-২০২৪ ক্যাটাগরিতে দেড় ভরি ওজনের সোনার ক্রেস্ট ও নগদ তিন লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রধান অতিথি।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
Post a Comment