উপজেলা বিএনপি সভাপতি মান্নানের কাণ্ড ; নারীর চার তলা বাড়ি অবৈধ দখল, লুটপাট
সোনারগাঁও দর্পণ :
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর পরই সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান যেন নিজেই ‘মুই কি হনুরে’ রূপ ধারণ করেছে। তিনি নিজেকে সর্বেসর্বা ভাবতে শুরু করেছেন। তোয়াক্কা করছেন না দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনাও। ফলে স্থানীয় বিএনপি সম্পর্কে ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব পরতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে গেল বছরের ৫ আগস্ট তার নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে স্থানীয় এক নারীর তিনটি টেন সেট ঘর এবং ১৪ ইউনিটের একটি ৪ তলা ভবন জোর পূর্বক দখল করে নেওয়ার অভিযোগ তুলে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
রবিবার (৫ জানুয়ারী) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী নারী উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা নিউটাউন সংলগ্ন প্রতাপের চর এলাকার তমিজ উদ্দিনের স্ত্রী মমতাজ বেগম।
উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের প্রতাপের চর গ্রামের ওই নারী সংবাদ সম্মেলনে তার লিখিত বক্তব্যে জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর উপজেলা বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে ঝাউচর গ্রামের সালাউদ্দিনের ছেলে জুয়েল, ইয়াসিনের ছেলে রিপন, হযরত বেপারীর ছেলে আলী নূর, প্রতাবের চর গ্রামের লাল মিয়া বেপারীর ছেলে খোরশেদ, আজমের ছেলে বাবুসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১৫০ জন লোক ওই নারীর ভাড়া বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
পরের দিন ৬ আগস্ট তার ১৪ ইউনিট বিশিষ্ট বসবাসকৃত ৪ তলা ভবনের ১২ টি উইনিটে থাকা ভাড়াটিয়া ও ভুক্তভোগী নারীর পরিবারের সকলকে মারধর করে টেনে হিছড়ে ওই ভবন থেকে থেকে বের করে দেয় এবং ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করে বিল্ডিংটিতে ভাংচুর করে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এমনকি স্থানীয় ক্ষমতার প্রভাবে পরবর্তীতে তার বাড়ির মেইন গেইটটি ইটের দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেয় এবং বিল্ডিং এর ভিতরের কেচি গেটসহ সকল রুমে তালা দিয়ে দেয়। বাড়িতে থাকা আম, জাম, কাঁঠাল ও কাঁঠ গাছসহ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টির বেশে গাছ কেঁটে নিয়ে যায়।
ওই নারী সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, ওই নারীর বাড়ির মেইন গেইট সংলগ্ন ভাড়া দেওয়া ৩টি দোকানেও ভাংচুর চালিয়ে দোকানগুলো বেআইনী ভাবে উচ্ছেদ করে ৭ থেকে ৮ ফুট উঁচু দেয়াল নির্মাণ করে রাখে।
এ সকল বিষয় তদন্তপূর্বক প্রতিকার চেয়ে গত ১১ আগস্ট ভুক্তভোগী মমতাজ বেগম সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ১৮ আগস্ট সোনারগাঁও থানা এবং ২৩ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সেনাবাহিনীর ক্যাম্প বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু এখনো কোন প্রতিকার না পাওয়ায় গণমাধ্যম কর্মীদের সরণাপন্ন হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
বর্তমানে ভুক্তভোগী মমতাজ বেগমের আর কোন বাড়ি না থাকায় পরিবার নিয়ে বাহিরে অবস্থান করতে হচ্ছে। তাই বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেছেন, আমি কারো জমি দখল করিনি। বরং ২০০১ সালে আমার দখল হয়ে যাওয়া বাড়ি উদ্ধার করেছি।