সোনারগাঁও দর্পণঃ
বাংলাদেশ হেফাজত ইসলাম’র সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক স্ত্রীসহ সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে অবকাশ যাপনকালের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। সোনারগাঁও উপজেলার হামছাদি গ্রামের মৃত সালাহউদ্দিনের ছেলে মো. শাহজাহান শিবলী বাদী হয়ে আড়াইহাজার উপজেলার সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুকে প্রধান আসামী করে ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ১শ থেকে দেড়শতাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামী উল্লেখ করে সোমবার মামলাটি করেন। মামলায় নারায়ণগঞ্জ-২ ও ৩ আসনের এমপি, তৎকালীণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসি, একাধিক এসআই ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী সহঅনেককে আসামী করা হয়।
এজাহারে শাহজাহান শিবলী অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ হেফাজত ইসলাম এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক বিগত ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল রাতে স্ত্রীসহ সোনারগাঁও থানাধীন খাসনগর দিঘীরপাড় সাকিনস্থ রয়েল রিসোর্ট হোটেলে অবকাশ যাপনকালে নারায়ণগঞ্জ-২ আসন (আড়াইহাজার) আসনের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু এবং নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের গোপন ষড়যন্ত্রে মামুনুল হককে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে এবং রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার হীন মানসে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ৩নং আসামী হইতে ১২নং আসামীর ((৩) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, (সাবেক পুলিশ সুপার), নারায়ণগঞ্জ, (৪) আতিকুল ইসলাম মুরাদ, এডিসি, ডিবি, (মতিঝিল জোন-২০২১) (৫) এস,এম, শফিকুল ইসলাম, বিপি-৮৫১০১৩৭৭৪৬, ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র), সোনারগাঁও থানা, (৬) মোঃ এনামুল কবির (সাবেক), পুলিশ ইন্সপেক্টর, ডিবি, নারায়ণগঞ্জ, (৭) হাফিজুর রহমান, ইন্সপেক্টর, সোনারগাঁও থানা, (৮) এমদাদ হোসেন তৈয়ব, পুলিশ ইন্সপেক্টর ধামগড় ফাড়ী, (৯) ফরিদ আহমেদ, এস.আই. তালতলা পুলিশ ফাঁড়ী, সোনারগাঁও থানা নারায়ণগঞ্জ, (১০) এস.আই ইয়াউর, ভিপি নং-৯০১৭১৯৯৯৩৭, (১১) এ.এস আই, এজাজুল হক, ভিপি নং-৮৫০৬০৮৬২৮৪, (১২) এইচ এম ইমন, এস আই (নিরস্ত্র), কলাবাগান থানা, (ডিএমপি ঢাকা ২০২১ সাল) নির্দেশে অন্যান্য সকল আসামীগন সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জন আসামীরা একত্রে জোটবদ্ধভাবে পরস্পর যোগসাজসে একে অপরের সহায়তায় জনাব মামুনুল হক সাহেবকে স্ত্রী সহ রিসোর্ট হতে জোরপূর্বক বাহির করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় রাত অনুমান সাড়ে ১১টার সময় সোনারগাঁও থানা এলাকার সাহাপুর গ্রামের মৃত আবু সাঈদ এর ছেলে হেফাজতকর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেন (৬০)’কে সহ আরো অনেকে সোনারগাঁও থানাধীন মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান করিয়া একত্রিত হইয়া মাওলানা মামুনুল হক সাহেবকে স্ত্রী সহ ধরার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ করায় নজরুল ইসলাম বাবু এবং আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের পরোক্ষ উস্কানীতে আসামী ৩ নং আসামী হইতে ১২নং আসামীদের হুকুমে অপরাপর উল্লেখিত আসামীগন সহ আরো ১০০/১৫০ জন আসামী একত্রে সেখানে উপস্থিত হইয়া মাওলানা ইকবাল হোসেনকে খুন করার উদ্দেশ্যে জোটবদ্ধ ভাবে এলোপাথারী ভাবে কিলঘুষি মারিয়া ও লোহার রড, লাঠি দিয়া মাথাসহ শরীরের অন্যান্য জায়গায় আঘাত করিয়া গুরুতর জখম করে। জখম অবস্থায় ইকবাল হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করে সোনারগাঁও থানায় মামলা নং ০৬ (৪) ২০২১ ও মামলা নং ০৭ (৪) ২০২১ মামলায় কোর্টে চালান দেয়।
উক্ত মামলায় মাওলানা ইকবাল হোসেনকে সোনারগাঁও থানা পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার নামে নজরুল ইসলাম বাবু ও কায়সার হাসনাতের উস্কানীতে ৩নং হইতে ১২নং আসামীরা তাহাকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়া ব্যাপক অত্যাচার নির্যাতন করে। পুলিশের নির্যাতনে মাওলানা ইকবাল হোসেন গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাহাকে পুলিশ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাওলানা ইকবাল হোসেনকে শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ এপ্রিল ২০২১ সালে দুপুর টার দিকে মারা যায়। পুলিশ লাশের পোষ্টমর্টেম করে এবং পরিবারের নিকট লাশ হন্তান্তর করে। মৃতের আত্মীয় স্বজন লাশ বাড়িতে নিয়ে পারিবারিক ভাবে দাফন কাফন করে। উল্লেখিত আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে উস্কানী ও হুকুমের মাধ্যমে খুন করার উদ্দেশ্যে মাওলানা ইকবাল হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে মারপিট করিয়া ও নির্যাতন করিয়া হত্যা করিয়াছেন। ঘটনার পর মৃত মাওলানা ইকবাল হোসেন এর পরিবার মামলা করিতে সাহস পায় নাই। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় ও পূর্বের জালেম ও স্বৈরাচার সরকার বিদায় গ্রহণ করায় এবং মৃত মাওলানা ইকবাল হোসেন হেফাজত ইসলামের একজন কর্মী হওয়ায় কর্তৃপক্ষের সহিত আলোচনা করে মামলাটি করেন।
Post a Comment