সোনারগাঁও দর্পণ :
নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কমপক্ষে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে নাকাল বিভিন্ন গণপরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহনে থাকা সাধারণ যাত্রীরা। সনাতন ধর্মাবলম্বিদের তীর্থস্থানখ্যাত জেলার বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্ধে ব্রহ্মপুত্র নদে মহাষ্টমী স্নান উৎসব উপলক্ষে আসা পূণ্যার্থীদের ঢল নামায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে পুলিশ ও গণপরিবহনের সাথে জড়িতরা জানিয়েছেন।
পরিবহন শ্রমিক ও বিভিন্ন যাত্রীরা জানায়, মহাসড়কের ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী লেনে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে লাঙ্গলবন্দ বাসস্ট্যান্ড এবং মহাসড়কের কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী লেনে কুমিল্লার গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর থেকে মেঘনা ব্রীজ হয়ে লাঙ্গলবন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকা পর্যন্ত এলাকায় থাকা যানবাহনের যাত্রীরা এ যানজচের কবলে পড়ে।
বুধবার (২৯ মার্চ) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, ত্রিবর্দী ও মেঘনা এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে জানাগেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৭টা থেকে মুলত এ যানজটের তীব্রতা বাড়ে। এরআগে, মঙ্গলবার দুপুর এবং বিকাল থেকে থেমে থেমে যানজটের কবলে পড়ে ঘরমুখো এবং ঘরফেরা মানুষ। কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি এক্সপ্রেসের চালক আবুল কালাম জানান, মঙ্গলবার বিকালে তিনি ঢাকা থেকে রওনা হোন দাউদকান্দির উদ্দেশ্যে। যেখানে সর্বোচ্চ দেড় ঘন্টা সময় লাগে সেখানে তিনি সাড়ে ৪ ঘন্টায় রাত ৮টার দিকে দাউদকান্দি পৌঁছান। একই গাড়ির যাত্রী মাহবুব জানান, তিনি মতিঝিলে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে তিনি অফিস শেষে গাড়িতে ওঠেন। সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ভবেরচর বাড়ি পৌঁছান আবার পরের দিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে গাড়িতে ওঠে ১০টার মধ্যে অফিসে ঢুকেন। অথচ মঙ্গলবার শুধু বাড়ি যেতেই রাত সাড়ে ১১টায় বাড়ি যান। আজ সকালে একই সময় গাড়িতে ওঠেন এখন বেলা ১০টা মেঘনা ঘাট এলাকায়। আজ আর যাওয়া হবেনা। মোগরাপাড়া এলাকায় একটি কাজ শেষে সেখান থেকেই বাড়ি ফিরবেন।
এদিকে, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, মেঘনা এবং ত্রিবর্দী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শতশত পথচারী ও বিভিন্ন স্থানে যেতে বাইরে আসা ব্যক্তিদেরকে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে আবার অপেক্ষা করে বাড়িও ফিরে গেছেন। বিভিন্ন এম্বুলেন্সকে একই জায়গায় বসে থেকে সাইরেন বাঁজিয়ে বসে থাকতে হয়েছে।
মোগরাপাড়া থেকে কাইকারটেক হয়ে বন্দর রুটের সিএিনজি চালক লিটন মিয়া জানান, মহাসড়ক এবং লাঙ্গলবন্দের যানজট বন্দরের মিনার বাড়ি এলাকা হয়ে হাজীর মোড় পর্যন্ত চলে আসায় বাইপাস সড়ক এবং মোগরাপাড়া থেকে বন্দর রুটটিও যানজটের কারণে প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে কিছুটা স্বাভাবিক হয়। আর আজ সকালে পূণ্যার্থীদের ঢল নামায় সকাল থেকে আবারো যানজটের সৃষ্টি হয়।
তিনি জানান, অনেক চালক যারা স্থানীয় তারা ¯œানে আসা র্পণ্যার্থীদেরকে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কালাদরগাহ (সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ) হয়ে কাজিরগাঁও ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে বেশি ভাড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। এই রুটে রাতভর সনাতন ধর্মাবলম্বিরা যাতায়াত করে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার টিআই (ট্রাফিক ইন্সপেক্টর) মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, লাঙ্গলবন্দ স্নানে পুণ্যার্থীদের আগমনকে ঘিরে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপে এ দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি। যানজট নিয়ন্ত্রণে কাঁচপুর হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ একসাথে কাজ করছে।
Post a Comment