সোনারগাঁও দর্পণ :
আওয়ামী লীগের অন্যতম সংগঠক, প্রয়াত এমসিএ এডভোকেট সাজেদ আলী মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সোনারগাঁও আসনের সাবেক সাংসদ প্রয়াত মোবারক হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত আবুল হাসনাতসহ সোনারগাঁওয়ের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে ভবিষ্যতে কোন রকম কটাক্ষ করলে জিহ্বা টেনে ছিড়ে ফেলার হুমকী দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহঝুজুর রহমান কালাম।
মঙ্গলবার বিকালে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার সময় তিনি এ হুশিয়ারী দেন।
মোগরাপাড়া ইউনিয়নকে স্থানীয় রাজনীতির রাজধানী আখ্যায়িত করে কালাম বলেন, যারা সমাজে ডাষ্ট তাদের বিষয়ে কথা বলা বা তারা কি বলল তা দেখার কোন ইচ্ছা নাই কিন্তু গত ১৫ জুন মোগরাপাড়া ইউনিয়নে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে বা নির্বাচনের আগে কে কি করেছে, কে কি বলেছে সেটাও তার দেখার বিষয় নয় জানিয়ে কালাম তার কষ্টের কথা জানাতে গিয়ে বলেন, যারা আজকে উপজেলা আওয়ামী লীগের হাইব্রীট, সুযোগ সন্ধানী, যাদেরকে কেউ কোন দিন সোনারগাঁও আওয়ামী লীগে দেখে নাই। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহিরাগত ওই তথাকথিত আওয়ামী লীগ নেতারা এসে, যখন ২৭ বছর আগে, এডভোকেট সাজেদ আলী মিয়া মারা গিয়েছেন, যাকে আমরা সোনারগাঁওবাসী দেবতাতুল্য মনে করি, যে সাজেদ আলী মিয়া সোনারগাঁওয়ে আলোক বর্তিকা দিয়ে গেছেন, স্কুল-কলেজ দিয়ে গেছেন, সেই সাজেদ আলী মিয়াকে যখন অকথ্য ভাষায় কথা বলে, মোক্তার সাহেবকে নিয়ে যখন অকাট্য কথা বলে, তখন কিন্তু আমরা কষ্ট পাই।
এ সকল আচরণ আওয়ামী রাজনীতির জন্য একটা ভয়ঙ্কর উল্লেখ করে কালাম আরো বলেন, সাজেদ আলী মিয়া ২৭ বছর আগে মারা যাওয়ার পর তার সম্পর্কে একজন মানুষও কোন কটু কথা বলার সাহস পায়নি। ২৬ বছর আগে মোবারক হোসেন মারা গিয়েছেন, তার সম্পর্কেও কেউ কোন কটু কথা বলতে পারেনি। আর ৭৫ পরবর্তীতে সোনারগাঁও আওয়ামী লীগের প্রাণ সঞ্চার ছিল আবুল হাসনাত। আজ সেই আবুল হাসনাতকে নিয়েও তারা কথা বলে, এটা কিসের গন্ধ ? এটা ষড়যন্ত্র। এটা সোনারগাঁও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। মোগরাপাড়াবাসী হিসেবে এটা আমাদের গাঁয়ে লাগে। এটাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।
কালাম বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে কাউকে পাওয়া যায়না। কেউ থাকেনা। আমরা যদি রাজ পথে না যাই, আন্দোলনে না নামি, তাহলে সোনারগাঁও এমন কোন মায়ের সন্তান নাই ওই সরকার বিরোধী আন্দোলন করার। যার প্রমাণ হিসেবে স্বৈরাচার এরশাদ সরকার ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কথা তুলে ধরেন তিনি।
কালাম বলেন, আমরা জাতীয় স্বার্থে ছাড় দিয়েছি। ৮৫ হাজার ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েও আমরা দুই বার ছাড় দিয়েছি, শুধু জাতীয় স্বার্থের কথা বিবেচনা করে। তার মানে এই না যে আমরা সকল ক্ষেত্রেই আপনাদেরকে ছাড় দিব। আপনারা রাজনীতি করবেন বিএনপি আর জাতীয় পার্টির সাথে। আর আমাদেরকে বলবেন আমরা আওয়ামী লীগের কিছু না। আমরা কিছু না কি সেটার শিক্ষা, সেটার জবাব আমরা আগামীতে ইনশাল্লাহ দিয়ে দিব। এখন আওয়ামী লীগের তমতমি অবস্থা দেখে উড়ে এসে জুড়ে বসতে চান।
এ সময় গত ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে সোনারগাঁও আসা ওই সকল বহিরাগত নেতাদের উদ্দেশ্যে কালাম দ্বের্থহীন ভাষায় হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্বাচন ছিল বলে কিছু বলি নাই। কিন্তু ভবিষ্যতে সোনারগাঁও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে যদি কেউ কোন দিন কোনরকম বাঁজে কথা বলে, তাহলে তার জিহ্বা টেনে ছিড়ে ফেলবেন বলে জানান তিনি।
কর্মীসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার প্রধান অতিথি ছিলেন। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুজ্জামান জামান, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ আহবায়ক কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ আহবায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম নান্নু, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও সদ্য অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবুল কালাম প্রধান, ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিন তিনবার নির্বাচিত সদস্য এবং প্যানেল চেয়ারম্যান -১ শিপন সরকারসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Post a Comment