স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী
মাত্র একরাতের ব্যবধানে কৃষি জমিকে স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে করা হয়েছে পুকুর। রাতের আঁধারে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে অবৈধভাবে ধানী জমি কেটে পুকুর খননের এ অভিযোগ উঠেছে ভুমিদস্যু ও মাটিখেকো স্থানীয় শামীম ও সামসুলের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার গোদাগাড়ী মডেল থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। অপরদিকে, স্থানীয় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটকের পর তাকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদÐ দিয়েছেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, রাজশাহী মহানগরীর গুড়িপাড়া এলাকার মৃত এমদাদুল হকের ছেলে শামীম ও পবা উপজেলার আসগ্রাম এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে সামসুল যৌথভাবে গোদাগাড়ী উপজেলার ৭ নং দেওপাড়া ইউনিয়নের ইদলপুর গোল শহর এলাকায় একটি পুকুরে মাছ চাষ করছিল। তারা যে পুকুরে মাছ চাষ করছিল সে পুকুর সংলগ্ন দেওপাড়া ইউনিয়নের রাজাবাড়ী হাট এলাকার হাজী আব্দুল লতিফের নিজ নামে তফশিল ভুক্ত বেশ কিছু জমি রয়েছে। গত বুধবার দিবাগত গভীর রাতে শামিম ও শামসুল মিলে অবৈধভাবে রাতের আঁধারে স্কোভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে আব্দুল লতিফের প্রায় এক বিঘা ধানী জমি কেটে পুকুরে পরিণত করে। বৃহস্পতিবার সকালে পুকুর খননের ঘটনাটির বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে, লিখিত অভিযোগের বিষয়ের প্রেক্ষিতে গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাছমিনা খাতুন বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় যান এবং ঘটনার সত্যতা পান। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত শামিম ও শামসুল পালিয়ে গেলেও স্কেলেটর দিয়ে মাটি কাটার সাথে জড়িত অভিযুক্তদের প্রতিনিধি আব্দুর রকিবকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাছমিনা খাতুন রকিবকে ১০দিন বিনাশ্রম কারাদণ্দেডাদেশ দেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে অবৈধভাবে মাটিকাটার স্কোভেটরটি জব্দ করেন।
স্থানীয়রা জানায়, গোদাগাড়ি উপজেলায় প্রেমতলি ফাঁড়ির সন্নিকটে দেওপাড়া ও গোগ্রাম ইউনিয়নে কয়েক মাস ধরে য় ফসলী আবাদি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে পলি যুক্ত মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা মাটি কেটে নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও নষ্ট করা হচ্ছে মাটির উর্বরতা। ফলে হুমকীর মুখে পড়েছে স্থানীয় কৃষি পণ্য। হাজার হাজার টাকা খরচ করে নানা কৃষিজ পণ্যের বীজ রোপন করলেও কৃষকরা হচ্ছে সর্বশান্ত। যার সাথে জড়িত রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী ব্যক্তি। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে প্রাণনাশের হুমকিসহ পুকুরের মাছ বিষ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয় প্রতিবাদকারীদের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
Post a Comment