সোনারগাঁও দর্পণ :
বিচার চেয়ে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছে সুবিধা বঞ্চিত নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল সোনারগাঁওয়ের নুনেরটেকের শিশুদের অবৈতনিক স্কুল ‘মায়াদ্বীপ জেলেশিশু পাঠশালা’র প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখি ও তার পরিবারের সদস্যরা। এমনই অভিযোগ করেছেন সূবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান কবি শাহেদ কায়েস। বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
শাহেদ কায়েস জানান, সোনারগাঁওয়ের নুনেরটেকের মায়াদ্বীপে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশন পরিচালিত সুবিধাবঞ্চিত জেলে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য অবৈতনিক স্কুল ‘মায়াদ্বীপ জেলেশিশু পাঠশালা’টি বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গত ২২ জানুয়ারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে একদল দুষ্কৃতকারী হামলা করেছিল। সেই হামলার নৃশংসতা থেকে বাদ পরেনি প্রধান শিক্ষক পাখির দেড় বছরের শিশুটিও। পাখির মা-কে অমানবিকভাবে মারধর করা হয়েছে, তার দুইভাই শরিফ ও রাশেদকে নৃশংসভাবে পিটানো হয়েছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় মামলা করলে তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ইতোমধ্যে মাত্র একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তারও জামিন হয়। এদিকে, প্রধান শিক্ষক পাখি ও তার পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে গ্রামছাড়া। বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। অপরদিকে, গ্রামে তাদের গবাদি পশুগুলো অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। তাদের আয়ের প্রধান উৎস মুদি দোকানটিও বন্ধ হয়ে গেছে। মাছ ধরতে যেতে পারছেন না পাখির বাবা। সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের স্কুলটি বন্ধ রয়েছে, যে স্কুলটিতে গ্রামের হত-দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েরা পড়াশুনার সুযোগ পায়।
নুনেরটেকে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে শাহেদ কায়েস এরআগেও বহুবার হামলা মামলা ও অফহরণের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে শাহেদ কায়েস বলেন, যারা স্কুল শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখি ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে তারা আগে বালু সন্ত্রাসী ছিল। এখন তারা এলাকায় অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত। এখানে স্কুল থাকায় অনেক ছেলে মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে। তাদের অপকর্মে বাঁধা দিচ্ছে। তারা ভাবছে স্কুল না থাকলে আমি বা প্রশাসনের কেউ সেখানে যাবে না। তারা সকল অপকর্ম অবাধে চালিয়ে যেতে পারবে। এজন্যই স্কুলটি বন্ধ করতে চায় তারা। স্কুল বন্ধের জন্য ৪ জন শিক্ষককে তারা গত পাঁচ মাস ধরে হুমকি দিয়ে আসছিল। এর মধ্যে ওই রাতে তারা এ হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের অধিকাংশ এক সময় রাজনীতি করতেন, এখনো কেউ কেউ করেন। বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড রাজনৈতিক নেতা হাশেমের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলে জানান শাহেদ কায়েস। এছাড়া হামলাকারী মেহেদী বারদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সাবেক সভাপতি এবং স্থানীয় নেতা ওসমান মেম্বারের ছেলে।
এদিকে, বর্তমানে হামলার ঘটনায় মামলা করায় প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে হামলাকারীরা। হামলাকারীদের হুমকির কারণে ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না তাঁরা।
তাই হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
Post a Comment