সোনারগাঁও দর্পণ :
গত ১৬ ফেব্রুয়ারী কাইকারটেক হাটের ইজারা নিয়ে সোনারগাঁওয়ের স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংগঠিত সংঘর্ষে আরও একটি অভিযোগ হয়েছে। মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ষোলপাড়া গ্রামের শাহজামাল তোতার ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহাগ রনিকে প্রধান আসামী করে আজ (২০ ফেব্রুয়ারী) রবিবার সোনারগাঁও থানায় এ অভিযোগটি করেন মোগরাপাড়া ইউনিয়নের নালআলাবদী গ্রামের ডা. মো. আব্দুল হামিদের ছেলে ফারুক আহমেদ।
অভিযোগে প্রধান আসামি ছাড়াও ২২ জনের নাম উল্লেখ করার পাশিপাশি অজ্ঞাত আরো ৪০ জনকে আসামী করা হয়। অভিযোগে অন্যান্যদের মধ্যে সোহাগ রনি’র বড় ভাই সোহেল (৩৬), ফুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত মজিব দালালের দুই ছেলে এবং সোহাগ রনি’র চাচা শাহ আলম (৫৫), শাহজামাল তোতা (৫৩), একই এলাকার মৃত জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সিরাজুল ইসলাম সজল (৩২), মৃত হাসন আলীর ছেলে আলমগীর (৪৩), নগর সাদীপুরের সাহাবুদ্দিনের ছেলে মিন্টু (৪২), হান্নানের ছেলে পারভেজ (৩৫), বাড়ি চিনিস গ্রামের সাহাবুদ্দিনের ছেলে লিজন (২৮), পুরান ত্রিবর্দী (টিপুরদি) গ্রামের নীল চাঁনকারীর ছেলে আলাউদ্দিন (৫৬), সালাউদ্দিনের ছেলে মিঠু (৪২), ফুলবাড়িয়া গ্রামের নসির উদ্দিন ওরফে নইচ্ছার ছেলে জসিম (৩২), কাফুরদী এলাকার এলাকার মৃত আনসর আলীর ছেলে গাজী খলিল মেম্বার (৬২) ও তার ছেলে গাজী জাবেদ (৩৫), আলাবদী এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে সেলিম (৩৫), মৃত নুরুল নইসলামের ছেলে আব্দুল আলী (৩৮), উলুকান্দা গ্রামের শাহনেওয়াজের ছেলে রানা (৩৩), কাফুরদী এলাকার আনসার আলীর ছেলে গাজী সামসুদ্দিন (৪৮), মৃত নজরুৈ ইসলামের ছেলে নাছির ওরফে নাছিম (৩৪), কৃষ্ণপুরা এলাকার নুরুদ্দিন মাস্টারের ছেলে মেহেদি (৩৫), বাদশা মিয়ার ছেলে শাহজালাল (৩৫), ষোলপাড়ার জাহাঙ্গীরের ছেলে অর্ণী আলম (২৮), ছোট অর্জুন্দী এলাকার মৃত গোবিন্দ চন্দ্র ঘোষের ছেলে সঞ্জল চন্দ্র ঘোষ (২৬) , পুরান ত্রিবর্দী (টিপুরদী) এলাকার সালাহউদ্দিনের ছেলে রিটু (৩১), শেখ আমান, পিতা অজ্ঞাত, কাবিলগঞ্জ গ্রামের আব্দুর রবের ছেলে ওয়ালিদ (২৮), মৃত তাহেরের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত (২৩) ও মুক্তিশপুর এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে আদনান (২৩)’কে আসামী করা হয়েছে।
এছাড়াও ৩০ থেকে ৪০ জন মাস্তান প্রকৃতির অজ্ঞাত ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ করে বাদী উল্লেখ করেন, ফারুকসহ বেশ কয়েকজন গত ১৬ ফেব্রæয়ারী দরপত্র দাখিলের জন্য সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের দিকে যাওয়ার সময় উল্লেখিত আসামীরা পূর্বশত্রæতার জের ধরে কাইকারটেক ও সোনারগাঁও চৌরাস্তা বাজার এলাকায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা হাতে ধারালো চাকু, চাপাতি, লোহার রড, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ তাদের গতিরোধ করে এবং পাচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বাদী সন্ত্রাসীদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাদীসহ অন্যান্যদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দিলে কাইকারটেক হাটের ইজারার দরপত্র জমা দিতে পারবো না বলেও হুমকি দেয়। এ সময় বাদীকে অবথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নানা ধরনের ভয়-ভীতি দেখায়। এক পর্যায় প্রতিবাদ করলে ১ নং ও ২ নং বিবাদীর নেতৃত্বে অন্যন্য অভিযুক্তরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাদীকে কিলঘুষি ও লাথি মেরে যখম করে। ১০ নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার ধারালো চাপাতিটি ১ নং বিবাদীর হাতে আগাইয়া দেয়। এ সময় ১ নং বিবাদী উক্ত লোহার ধারালো চাপাতি দিয়ে বাদীকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথায় ধারলো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। এতে বাদীর কপালের ওপর ডান পাশে কেটে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত যখম হয়। এক পর্যায় ফারুক মাটিতে লুটিয়ে পরলে, ২ নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে তার (বাদীর) মাথার বাম পাশে কপালের ওপর কোপ মারে। যাতে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম হয় এবং অন্যান্য বিবাদীদের হাতে থাকা লোহার রড, হকি ঠিক, হাতুড়ি ও লাঠিসোটা দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত আহত করে। এ সময় ৫ নং বিবাদী তার (বাদী ফারুক) গলায় পা দিয়ে চাঁপ দিয়ে ধরে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় ৬ নং বিবাদী ফারুকের কাছে থাকা ব্যাগের ভেতরে রাখা তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তিনি ডাক চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসতে থাকে। এক সময় তার সাথে থাকা তার ছেলে রোবায়েত, ভাই ডাঃ আক্তার হোসেন ও চাচাতো ভাই রাজিব প্রধান তাকে বাঁচাইতে এগিয়ে গেলে অভিযুক্তরা তাদেরকেও লোহার রড, হকি ষ্টিক ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটায়। পরে তার চাচাতো ভাই রাজিব প্রধান আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।
অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সোনারাগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্তনাধীন। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এরআগে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সজল বাদী হয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুলেইসলাম নান্নুকে প্রধান আসামী করার পাশাপাাশি মোগরাপাড়া ইউনিয়েনের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু এবং ১ নং ওংয়ার্ড সদস্য শিপন সরকারসহ আরও বেশ কয়েকজনকে আসামী করে একটি মামলা করে।
Post a Comment