সোনারগাঁও দর্পণ :
দলমত নির্বিশেষে সোনারগাঁওয়ের এক সময়ের জনপ্রিয় নেতা, ন্যায় বিচারক ও সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন গত হয়েছেন গত ২২ জুলাই। হিসেব কষলে একমাসও হয়নি। সম্প্রতি উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে কে হবেন মোশারফ হোসেনের স্থলাভিষিক্ত। যদিও মোশারফ হোসেনের মৃত্যুর ঠিক পরের দিন থেকেই অতি উৎসাহি গোটা কয়েক তেলবাঁজ তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান বলে নিজের অবস্থান জানান দেন। অথচ শুধু সাধারণ মানুষই নয়, খোঁদ যাদেরকে মোশারফ হোসেন চেয়ারম্যানের জায়গায় দেখতে চেয়েছেন তারাও বোধ করি সে সমস্ত তেলবাঁজিতে বিব্রত হয়েছেন।
যাই হোক, গত ৫ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে মোশারফ হোসেনের মৃত্যুতে শোক জানানোর পাশাপাশি ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আর্থিক দায়িত্ব পালন এবং উপ নির্বাচন করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশের পর থেকে মুলত উপ নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় কিছুটা জোড়ে সোড়ে।
প্রশ্ন উঠেছে কে হচ্ছেন সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের পরবর্তী চেয়ারম্যান ? এ পর্যন্ত কোন নেতা বা ব্যক্তি নিজেকে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বা অভিব্যক্তি প্রকাশ না করলেও অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের নাম প্রকাশ করেছেন। যাদের নাম এ পর্যন্ত এসেছে তাদের মধ্যে প্রয়াত মোশারফ হোসেনের ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনির হোসেন, দেশের প্রথম সর্বকনিষ্ঠ সাবেক সংসদ সদস্য মোবারক হোসেনের ছেলে এরফান হোসেন দীপ, মোশারফ হোসেন চেয়ারম্যানের ছেলে তান্না হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক এ্যাড. সামসুল ইসলাম ভূইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (স্বাচিপ) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন আহবায়ক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম রূপনসহ অনেকের নাম।
উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচন নিয়ে থানা ও ইউনিয়ন পর্যায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতার সাথে আলাপ হয়েছে সোনারগাঁও দর্পণের। প্রশ্ন ছিল উপ নির্বাচন নিয়ে তাদের ভাবনা এবং সামাজিক মাধ্যমে নানাজনকে প্রার্থী করে তোলা প্রসঙ্গে অভিমত কি? প্রায় সকলেই তাদের নাম প্রকাশ না করার জোর অনুরোধ করেন। কারণ হিসেবে তারা তুলেও ধরেন সে ব্যাখ্যা।
বিএনপি’র দুই একজন (প্রতিবেদক যাদের সাথে কথা বলেছেন) ছাড়া সকলের প্রায় একই কথা। মোশারফ চেয়ারম্যানের তুলনা মোশারফ চেয়ারম্যানই। এটা ঠিক যে কেউ না কেউ তার আসনে বসবেন। পরিষদও চালাবেন নিজ যোগ্যতায়। কিন্তু মোশারফ হোসেন চেয়ারম্যান যেভাবে উপজেলার গণমানুষের নেতা হয়ে উঠেছিলেন, ন্যায় বিচারক হিসেবে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন, সেভাবে গণমানুষের নেতা হওয়ার মতো কেউ আছে বলে মনে করেন না তারা।
অনেকের মতে, এখন পর্যন্ত যে ক’জনের নাম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রকাশ পেয়েছে তাদের মধ্যে মোশারফ হোসেনের পর যোগ্যতার দিক দিয়ে প্রথমেই আসে মাহফুজুর রহমান কালামের নাম। কিন্তু, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে শাস্তি হিসেবে তাকে দলের বাইরে রাখায় তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখার প্রত্যাশা অবান্তর বলেই মনে করেন তারা।
তাদের মতে, এমনও কয়েজনের নাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে ওই সমস্ত নেতা-কর্মী বা প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা।
(প্রিয় পাঠক, মোশারফ হোসেনের মৃত্যু ও উপ নির্বাচন ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদনটির ২য় পর্ব আগামীকাল প্রকাশ করা হবে।)
Post a Comment