সোনারগাঁও দর্পণ :
(প্রথম পর্ব প্রকাশের পর) মাহফুজুর রহমান কেন অনেকের কাছে উপজেলা নির্বাচনে প্রথম এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেছেন, মাহফুজুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন বার্ণাঢ্য। তিনি ছাত্রজীবন থেকে অনেক হামলা, মামলা, জেল, জুলুম সহ্য করে চড়াই-উতরাই পার করে এ পর্যন্ত এসেছেন। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে তার দুরদর্শীতায় আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রয়াত আবুল হাসনাতের সাথে মাহফুজুর কালামই রাজপথে থেকেছেন। মাহফুজুর রহমান কালামের শুধু সোনারগাঁও নয়, জেলা ব্যাপী তার একটি পরিচিতি রয়েছে সকল দলের নেতাকর্মীদের কাছে। এছাড়া, এরআগেও মাহফুজুর রহমান কালাম উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে মাঠে ছিলেন এবং তার ব্যক্তিগত অবস্থান কি সেটা জানান দিয়েছেন। যদিও সোনারগাঁও আওয়ামী লীগের বিভক্তির পেছনে মাহফুজুর রহমান কালামকেই আবার দায়ি করেছেন কেউ কেউ। তারপরও যোগ্যতার বিচারে মাহফুজুর রহমান কালামকেই যোগ্য মনে করেন তারা।
হাসনাত পরিবার থেকে উপজেলা নির্বাচনে কাউকে যোগ্য মনে করছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে পাওয়া যায় বিভিন্ন মত। কারো কারো মতে, রাজনীতি কোন আবেগের বিষয় নয়। আবেগ দিয়ে রাজনীতি হয়না। তাদের মতে, এ পরিবার থেকে প্রয়াত মোশারফ হোসেনের ভাই বিশিষ্ট শিল্পপতি মনির হোসেন ও মোশারফ হোসেনের ছেলে তান্না হোসেনের রাজনৈতিকভাবে এখনও আত্মপ্রকাশ ঘটেনি। যদিও মোশারফ হোসেন থাকতেও মনির হোসেনকে দুই একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে মোশারফ হোসেন ও কায়সার হাসনাতের সাথে দেখা গেছে। এছাড়া, মনির হোসেন ব্যক্তি হিসেবে নরম মনের ভাল মানুষ হিসেবেইে স্থানীয়ভাবে পরিচিত মুখ। তাদের মতে, ক্ষমতা অনেক সময় অনেককে যোগ্য করে তোলে। কেউ কিছু শিখে পৃথিবীতে আসেনা। দায়িত্ব পেলে অনেকেই দায়িত্ববান হয়ে ওঠে। সে ক্ষেত্রে তারা শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর দীর্ঘ দিন পর শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগে ক্ষমতায়ন এবং অদ্যবদী তার দায়িত্ব আর দুরদর্শীতার দৃষ্টান্তও উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।
তবে যেহেতু, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মোবারক হোসেনের ছেলে এরফান হোসেন দীপ বেশ কিছুদিন ধরে পুরো উপজেলায় সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ড করছেন। তাকে এ পরিবারের সদস্য এবং তার বাবা’র দুরদর্শীতার কিছু কিছু দিকও দীপের আছে বলে মত প্রকাশ করেন কেউ কেউ। এছাড়া, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু একাধিকবার নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্যও। শুধু মোগরাপাড়া ইউনিয়নই নয়, উপজেলা জুড়ে আরিফ মাসুদ বাবু’র রয়েছে বেশ সুনাম এবং প্রশাসনিক, দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড করারও অভিজ্ঞতা। তবে মতামত দেয়া সকলেই একটি বিষয়ে একমত। তা হলো, ১৯৭০ সালের নির্বাচন থেকে শুরু করে অদ্যবদি এ পরিবারটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সুখে-দুঃখে সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন। রাজনৈতিক ও সামাজিক যে কোন সমস্যায় রেখেছেন তাদের যোগ্যতার প্রমাণ। এছাড়া, হাসনাত পরিবার হিসেবে খ্যাত এ পরিবারটি পারিবারিকভাবে কাউকে উপজেলা উপ নির্বাচনে নির্বাচন করতে একমত হয়েছেন কি-না, পরিবার থেকে নির্বাচন করবেন কি-না, করলে কাকে নির্বাচন করবেন সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আর কেন্দ্র অবশ্যই তাদের পরিবারকে অবমূল্যায়ন করবেনা বলেও মত দেন তারা।
অপরদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতা এ্যাড. সামসুল ইসলাম ভুইয়া দীর্ঘ দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনিও অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন দলটির জন্য। তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবেও ছিলেন। বর্তমানে সামসুল ইসলাম ভ‚ইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক। তার যোগ্যতার বিষয়েও একই কথা প্রকাশ হয় বেশি। ক্ষমতা বা চেয়ার পেলে অনেকেই যোগ্য হয়ে ওঠে। সাংগঠনিকভাবে সামসুল ইসলাম ভুইয়া তার যোগ্যতার প্রমাণ রাখলেও জনপ্রিয়তা একটি বিষয়, যা নির্বাচনে প্রভাব ফেলে। সেটি রাজনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি পারিবারিক প্রভাব, ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতাসহ অনেক কিছুই নির্ভর করে বলে মত তাদের।
(প্রিয় পাঠক, মোশারফ হোসেনের মৃত্যু ও উপ নির্বাচন ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদনটির ৩য় পর্ব আগামীকাল প্রকাশ করা হবে।)
Post a Comment