সোনারগাঁও দর্পণ :
কোন রকম সমঝোতা ছাড়াই বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধের ৯ ঘন্টা পর সচল হয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুটি মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-মিলেট মহাসড়ক। যদিও পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিনহা এন্ড ওপেক্স গ্রæপ কর্তৃপক্ষের সাথে ১৩ ও ১৯ জুলাই বেতন-ভাতার সাথে ঈদ বোনাস প্রদান করার আশ^াস দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের কথা না শুনে মহাসড়ক পূণরায় অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে।
এরআগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা -সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুরে সিনহা গ্রæপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ওপেক্স ও সিনহা গার্মেন্টেস’র হাজার হাজার শ্রমিক তাদের ৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। ফলে মহাসড়কের দুই দিকে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শিল্প ও থানা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শ্রমিক প্রতিনিধি ও সিনহা এন্ড ওপেক্স গ্রæপের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আগামী ১৩ ও ১৯ জুলাই বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত দেয় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন।
অবরোধের সময় শ্রমিকরা জানায়, সিনহা গার্মেন্টেস এর শ্রমিকদের তিন মাসের এবং ওপেক্স গার্মেন্টেস’র শ্রমিকদের ৪ মাসের বেতনের টাকা বকেয়া করেছে কর্তৃপক্ষ। লকডাউনের কথা বলে তারা প্রতিমাসে সময়ক্ষেপন করছিল।
এদিকে শ্রমিকদের দাবি, প্রতি মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কর্র্তৃপক্ষ বেতন দিচ্ছেনা। সবশেষ গত মাসের ২৮ জুন বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও আজ ৮ জুলাই তা পরিশোধ করা হয়নি।
অপরদিকে, যে সকল শ্রমিকরা বেতন চাইছে তাদেরকে বাধ্যতামুলক দীর্ঘ ছুটি দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ফলে তারা বেতন ভাতা পরিশোধ ও কর্র্তৃপক্ষের মর্জিমত শ্রমিক ছাটাই বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে।
তারা জানান, লকডাউনের মধ্যে উর্ধ্বগতির বাজারে বাকী পণ্য নেয়া দোকানদার তাদের বাকী টাকা আর বাড়ির মালিকেরা ঘর ভাড়ার জন্য শ্রমিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। টাকা না থাকায় তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই আছে। ফলে বাধ্য হয়ে সকাল ৭টা থেকে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে বিক্ষোভ করে রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
এদিকে, দুটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক, লরি ও কাভার্ডভ্যান বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে এ সকল যানবাহনে থাকা পরিবহন শ্রমিকরা। নষ্ট হওয়ার উপক্রম কাঁচামাল। এমনকি জরুরী রোগী পরিবহন করা এ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীদের নিয়েও ভোগান্তিতে পরেছে স্বজনরা।
মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি ও শ্রমিকদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তফা মুন্না, সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাফিজুর রহমান।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাফিজুর রহমান জানান, সিনহা ও ওপেক্স গ্রæপ কর্র্তৃপক্ষ আগামী ১৩ ও ১৯ জুলাই শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ^াস দেয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানতে রাজি হয়নি। পরে পুলিশ হালকা লাঠিচার্জ করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যার যার গন্তব্যে চলে যায়।
Post a Comment