ডাক নাম ‘ইসহাক’। হ্যাংলা পাতলা দেহ গড়ন। গায়ের রং কালো। পেশায় অত্যন্ত বিশ্বাসী কাজ দলিল লিখক। ইসহাককে দেখতে সাদাসিধে সরল প্রকৃতির দেখালেও আদতে তা নয়। তার সাদাসিধে ও সরল চেহারাকে পুঁজি করে গ্রুপের সদস্যদের দিয়ে একের পর করে যাচ্ছে অপকর্ম ।
অভিযোগ রয়েছে, বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের সাবেক সভাপতি শাহ মো: আবু ইসহাক তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে সিন্ডিকেট করে তার গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা সরকার ও জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এমন কি বৈদ্যের বাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লিখক ও ভেন্ডার সমিতির নির্বাচনে পরাজিত হয়ে আক্রোশে বশবর্তী হয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে শুধু আহতই করেননি তাদের সাথে থাকা নগদ টাকা-পয়সাও ছিনিয়ে নিয়েছে গ্রুপটির সদস্যরা। এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানায় একটি মামলা (৩৮/৬৩ তারিখ ২৭ ফেব্রæয়ারী ২০২১ ইং) হয়েছিল। যদিও মামলাটিতে বর্তমানে জামিনে আছেন ইসহাক গ্রুপের ইসহাক (৫০) ও তার ভাই আলী হায়দার (৪৫), আমজাদ হোসেন (৩৯) ও তার ভাই নুরনবী (৩৫), ইসহাকের ভাগিনা মির্জা গাজী (২৪), ইসহাকের বোনের স্বামী হযরত আলীসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈদ্যেরবাজার সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের একাধিক সূত্র জানায়, ইসহাক গ্রুপের বর্তমান কর্মকাণ্ডে তাদের ধারণা এ গ্রুপটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে তাদের আখের ঘোঁচাতেই তার ভাই, বোন, বোনের স্বামী, ভাগনিসহ বিভিন্ন স্বজনদেরকে নকল কারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ইসহাক গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে আমজাদ হোসেন, তার ভাগিনা মির্জা গাজী ও ইসহাকের বোনের স্বামী হযরত আলী’র দলিল লিখকের কোন সনদ না থাকলেও প্রকাশ্য দিবালোকে সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে ইসহাকের কক্ষের ভেতর বসে দলিল লিখার কাজ করে যাচ্ছে দেদারসে।
সূত্রটি দাবি করে, ইসহাক ও তার ভাই আলী হায়দার তার গ্রুপের আমজাদ হোসেন, তার ভাগিনা মির্জা গাজী ও ইসহাকের বোনের স্বামী হযরত আলী’র মাধ্যমে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরিয়ে পরে মোটা অংঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের উদ্দেশ্য সফল করে। এমনও অভিযোগ রয়েছে, এই গ্রুপটি বর্তমান সোনারগাঁওয়ে জাল দলিল প্রতারক ইসহাক গ্রুপ নামে পরিচিতি পেয়েছে ব্যাপক।
সূত্রটি জানায়, ইসহাক গ্রুপ শুধু তাদের স্বজনদের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করেই ক্ষ্যান্ত নয়। এই গ্রুপটি অন্য একটি চক্রের সাথে মিলে দীর্ঘ দিন ধরে অফিসে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে আসা মানুষদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কেউ কোন প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চড়াও হয়ে আহত করে।
ভুয়া ও জাল দলিল লিখক প্রতারক ইসহাক গ্রুপের অপকর্মের বিষয়ে সম্প্রতি বৈদ্যের বাজার সাব-রেজিষ্টার অফিসের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য দলিল লিখকরা তাদের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দূর্নীতি দমন কমিশন, মহাপরিদর্শক নিবন্ধন অধিদপ্তর, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা রেজিষ্টার, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছে।
বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিষ্টার অফিসের দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদ সরকার জানান, ইসহাকসহ একাধিক চক্র দলিল লিখক সমিতিকে নানা ভাবে হেয় করতে আঁদাজল খেয়ে নেমেছে। প্রতিবাদ করলে হামলা-মামলা করে। আমরা বিভিন্ন দফতরে অভিযোগও করেছি। সমিতির সদস্যরা অনেক বুঝানোর পরও তারা সুধরাচ্ছেনা। আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের অপকর্মের অবসান চাই।
এ ব্যাপারে ইসহাকের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
Post a Comment