মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে ‘লকডাউন’ অন্যতম নিয়ামক। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। ‘লকডাউন’ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে কার্যকর বলেই বিশ্বের সকল দেশ এই পদ্ধতি অনুসরণ করে।
দেশে তৃতীয় বারের মতো ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে সরকার। নিঃসন্দেহে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা সকল শ্রেণি পেশার মানুষের এক কথায় জনগণের ভালোর জন্যই নিয়েছে। যদিও অনেকে আবেগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা অজ্ঞতার কারণে লকডাউনের সিদ্ধান্তে সরকারকে গালমন্দ করে থাকেন। যা অবশ্যই সমিচীন নয়।
লকডাউন বিষয়ে গালমন্দ করার কারণ হিসেবে অনেকে মাঠ পর্যায় লকডাউনে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের বৈষম্য আচরণকে দায়ি করেন। যার অভিজ্ঞতা আমাদের সম্প্রতি হয়েছে। দেশে প্রথম লকডাউন সত্যিকার অর্থে ‘লকডাউন’ হিসেবে পালন করার কারণেই এ দেশে করোনা ভাইরাস তেমন ব্যাপকতা পায়নি। আবার দ্বিতীয় দফায় লকডাউন পালন নামমাত্র ‘লকডাউন’ হওয়ায় তার সুফলের পরিবর্তে কু-ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি।
যদিও তৃতীয় বারের মতো প্রথমে আগামী (২৮ জুন) সোমবার থেকে সরকার সারাদেশে তৃতীয় দফা ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে। তবে, আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রির সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার নয়, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কঠোর লক ডাউন পরিচালিত হবে। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘কঠোর লকডাউন’। যেখানে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
গতকাল (২৫ জুন) শুক্রবার রাতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে ‘কঠোর লকডাউন’র সিদ্ধান্তের পর থেকে এখনও অনেকে লকডাউনকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না বলেই আমার মনে হয়েছে। আমি হলফ করে বলতে পারি, যারা এবারের ‘কঠোর লকডাউন’কে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন, তারা অবশ্যই সমস্যার সম্মুখিন হবেন। আর আমরা সাধারণ মানুষও চাইনা অযাচিত কোন ঝামেলায় পরার।
এদিকে, কাউকে সমস্যায় ফেলাও যেহেতু প্রশাসনের বা লকডাউন পালনে জনগণকে ঘরে রাখতে মাঠে দায়িত্ব পালনকারীদের তাদের মুল উদ্দেশ্য নয়। অপরদিকে, জনগণও যেহেতু গত লকডাউনে বৈষম্য আচরণেরও অভিজ্ঞতা রয়েছে সাধারণ মানুষের সেহেতু, প্রশাসনের উচিত ‘কঠোর লকডাউন’র কঠোরতা সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করা।
তাই, আমার মতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ বিষয়ে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায় মাকিংয়ের পাশাপাশি সকল মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গীর্জা, পেগোডা সংশ্লিষ্টদের দিয়ে এর কঠোরতা সম্পর্কে সচেতনতা মুলক প্রচারণা করা যায়। আর গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা যদি সকলের স্থান থেকে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে স্বল্প সময়ে অবশ্যই মানুষের মাঝে এক ধরণের সচেতনতা ও ভয় কাজ করবে। যা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার প্রতিরোধে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
Post a Comment