সোনারগাঁওয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের দুই ভূমি দস্যু হাজী আলাউদ্দিন গ্রুপ ও জজমিয়া গ্রুপ আবারও বেপরোয়া হয়েছে উঠেছে। তাদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে অসহায় হয়ে উঠেছে স্থানীয় সাধারণ গ্রামবাসী। কিছু দিন পর পর তাদের উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা-ভাঙচুর,ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া আর হত্যাকাণ্ডে পুলিশের ধরপাকর আতঙ্কে থাকেন স্থানীয় সাধারণ গ্রামবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাত্র কয়েকটা দিন তারা অনেকটা শান্তিতেই ছিলেন কিন্তু আজ আবারও দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের বাড়ি-ঘরে হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ের করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, আধিপত্য বিস্তার ও একটি কোম্পানির বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের হাজী আলাউদ্দিনের সাথে সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত ৪টি হত্যাকাÐ ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে সাদেক মোল্লার স্বজন জজ মিয়া গ্রæপের সাথে হাজী আলাউদ্দিন গ্রুপের আবারও দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া পরবর্তী লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একপক্ষ অপর পক্ষকে দায়ি করছে। দাবি করা হচ্ছে উভয় গ্রæপের নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের স্থানীয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২৫জনের নাম উল্লেখ করে সোনারগাঁও থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
সোনারগাঁ থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, নয়াগাঁও গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের গত ১৯ ফেব্রুয়ারী রাতে হাজী আলাউদ্দিনের সাথে একই এলাকার সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার আধিপত্য বিস্তার ও একটি কোম্পানির বালু ভরাট নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে ১০ জন আহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরের দিন সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে আলাউদ্দিন গ্রুপের সমর আলী, জাহিদুল ইসলাম, মাহিলউদ্দিন, মোশারফ, নুর নবী, নিলা, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল আলীসহ ৮ জন, সাদেক পক্ষের খোরশেদ আলম, সাইদুল ইসলাম, আলী আহম্মেদ, জহিরুল ইসলাম, বিপ্লব, সুমন, শাকিল, মাহফুজ, ছোট সুমনসহ ১২ জন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে আলাউদ্দিন পক্ষের সমর আলী সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর মারা যান। ঘটনায় ৪দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলী আহম্মদ এবং এর ১৩ দিন পর সাইদুল ইসলাম গত ৫মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এঘটনায় আলাউদ্দিন পক্ষের দ্বীন ইসলামকে সাদেক ও জজমিয়া পক্ষের লোকজন পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৫টি মামলা হয়।
Post a Comment